পশ্চিমের সংস্কৃতি মেনে এ দেশেও আমরা অনেকেই সন্তানের জন্য আলাদা ঘরের ব্যবস্থা করি এবং সেই ঘরেই তাদের ঘুমোনোর ব্যবস্থা করি। আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞান কিন্তু বলছে, বাল্যকালে শিশুর সঙ্গে মা-বাবার ঘুমোনোর অভ্যাস তার মানসিক বিকাশে সাহায্য করে। বুদ্ধিতেও প্রভাব ফেলে।
আসুন জেনে কেন বাবা-মায়ের সঙ্গে ঘুমালে ভালো থাকবে শিশু।
বিছানায় ঠাঁই
শিশুকে বিছানায় রাখুন নিজেদের ঘরেই। সবচেয়ে ভাল, যদি একই বিছানায় ঠাঁই হয় তার। মনোবিদদের মতে, অন্তত একটা বয়স পর্যন্ত শিশুর সঙ্গেই মা-বাবার ঘুমোনো উচিত। এতে নিজের জিনিসপত্র ভাগ করে নিতে শেখে শিশু। সেই সঙ্গে মা-বাবার সঙ্গে তার সম্পর্কও হয় সহজ-সরল।
হঠাৎ অসুস্থ
রাতে শিশুর কোনও প্রয়োজন পড়তেই পারে। হঠাৎ অসুস্থ বোধ করতে পারে সে। শিশু আলাদা ঘরে থাকলে সব সময় উঠে গিয়ে তার ঘরে ঘুরে আসা যায় না। তাই কখনও অসুস্থ হয়ে শিশু তা জানাতে না পারলে, তার অসুস্থতা বোঝার উপায়ও থাকে না। তাই রাতেও নিজেদের কাছেই রাখুন তাকে।
নিরাপত্তা
শিশুর ব্যক্তিগত বোধ ও নিজস্ব জগৎ আলাদা করে যত দিন না তৈরি হচ্ছে, তত দিন তাকে কাছে রাখলে শিশু নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে না। চিকিৎসকদের মতে, যে সব সন্তান একটা সময় পর্যন্ত বা চিরকাল অভিভাবকদের সঙ্গে ঘুমোয়, তাদের আত্মবিশ্বাস বাড়ে। পরিবারের বেশি ঘনিষ্ঠ হয় তারা।
হরমোনাল সমস্যা
শিশুকে গল্প বা গান শুনিয়ে ঘুম পাড়ানোর অভ্যাস থাকলে তা তার কল্পনাশক্তি বাড়ায় ও আবেগী করে তোলে। ঘুমের মধ্যে যে সব শিশু শরীরে মা-বাবার স্পর্শ পায়, তাদের হরমোনাল সমস্যা কম হয় বলে জানিয়েছেন মনোবিদ অমিতাভ মুখোপাধ্যায়ের।
অভিভাবক
সন্তান কাছে থাকলে মা-বাবার উদ্বেগও কমে। মাঝে মাঝে উঠে গিয়ে দেখে আসার তাড়না থাকে না বলে, ঘুম ভেঙে যাওয়ার প্রবণতা কমে। এতে সুস্থ তাকে অভিভাবকদের শরীরও।
অনেকেই মনে করেন, রাতে নিজস্ব সময়ে সন্তান কাছে থাকলে অভিভাবকদের ব্যক্তিগত পরিসর কমে। চিকিৎসকদের পরামর্শ, তেমন প্রয়োজনে নিজস্ব সময় বরাদ্দ করুন। দরকারে নিজেদের জন্য ব্যবহার করুন অন্য কোনও ঘর। দাম্পত্য প্রয়োজন মিটলে সন্তানের কাছেই ফিরুন, এক সঙ্গে ঘুমোন।